বিদ্যালয়টি ১৯৪৩ সালে স্থাপিত হয়। এতে একাডেমিক ভবন ১ ও একাডেমিক ভবন ২ নামে দু’টি তিনতলা ভবন, রম্নহুল আমিন হল নামে একটি দোতলা প্রশাসনিক ভবন, ফাতেমা হল ও রোকেয়া হল নামে একটি এল আকৃতির দোতলা ভবন রয়েছে। এছাড়াও স্টেডিয়াম সংলগ্ন একটি দোতলা ভবন রয়েছে। ছাত্রীদের আবাসনের জন্যে রয়েছে একটি চারতলা ভবন। বিদ্যালয়টি ----- শতক জায়গা জুড়ে রয়েছে। প্রশাসনিক ভবনের সামনে রয়েছে একটি সুপ্রশসত্ম মাঠ। ছাত্রীনিবাসের পাশেই প্রধান শিক্ষিকার একটি বাসভবন রয়েছে।
১ সেপ্টেম্বর ১৯৪৩ সালে এস.ভি. সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের জন্ম। কিশোরগঞ্জ শহরের এটি প্রথম ও একমাত্র সরকারী বালিকা বিদ্যালয়। ১৯১৪ সালে আরবান স্কুল নামে প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। পরবর্তীতে একটি মিডল স্কুল সংক্ষেপে এম.ই স্কুল নামে ৬ষ্ঠ শ্রেণী পর্যমত্ম সহপাঠ চালু হয়। কালক্রমে প্রয়োজনের তাগিদে স্থানীয় উৎসাহী ব্যক্তিবর্গের সাহায্য, সহানুভূতি ও প্রচেষ্টার ফলে হাঁটি হাঁটি পা পা করে ১৯৪৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর তারিখে বিদ্যালয়টি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে উন্নীত হয়। ১৯৪৩ সালে ৭ম শ্রেণী থেকে ৯ম শ্রেণী পর্যমত্ম মাত্র ৩৭ জন ছাত্রী হয়। সর্বমোট ৫১ জন ছাত্র-ছাত্রী ও ৯ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়ে এ বিদ্যালয়টি পথচলা আরম্ভ করে। কিশোরগঞ্জ সদর থানার শোলাকিয়া গ্রামে বর্তমানে যেখানে শোলাকিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অবস্থিত তার উত্তর পাশে তৎকালে বসবাসকারী এডভোকেট ভৈরব চমদ্র চৌধুরীর কন্যা সরযূ বালার নামেই উচ্চ বিদ্যালয়টির নামকরণ করা হয় ‘‘সরযূ বিদ্যা নিকেতন’’। পরবর্তীতে কিছুটা পরিবর্তিত আকারে সরকারীকরণের পূর্ব পর্যমত্ম এর পুরো নাম হয় ‘‘সরযূ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়’’। কালক্রমে ১৯৬৮ সালের ১৫ নভেম্বর তারিখে বিদ্যালয়টি সরকারীকরণ করা হয়। তখন বিদ্যালয়টির নতুন নামকরণ করা হয় এস.ভি. সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। ইংরেজিতে বানান Saraju এর S (এস) ও Vidyaএর V(ভি) নিয়ে সরযূ বিদ্যার সংক্ষিপ্ত নাম এস.ভি. করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রথম প্রধান শিক্ষক জগৎ চন্দ্র চক্রবর্তী ও প্রথম প্রধান শিক্ষিকা মিস আজিজুন্নেছা কিশোরগঞ্জের কৃতি সমত্মান। প্রথম শ্রেণী থেকে শুরম্ন হলেও ধাপে ধাপে প্রাথমিক শাখা বিলুপ্ত করা হয়। ১৯৮৪ সাল থেকে ৩য় পর্যমত্ম চালু ছিল। ১৯৮৫ সাল থেকে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণী চালু হয় যা আজও চলছে।
বিদ্যালয়টিতে ২০১১ সাল থেকে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যমত্ম ডাবল শিফট চালু হয়েছে।
ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা (শ্রেণীভিত্তিক) |
|
বিদ্যালয়ের ভর্তি কমিটির সভাপতি মাননীয় জেলা প্রশাসক। এছাড়াও আছেন সিভিল সার্জন, কিশোরগঞ্জ, উপাধ্যক্ষ, গুরম্নদয়াল সরকারী কলেজ, কিশোরগঞ্জ, নির্বাহী প্রকৌশলী, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, কিশোরগঞ্জ ও জেলা শিক্ষা অফিসার, কিশোরগঞ্জ।
বিগত ৫ বছরের সমাপনী/পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল : | এস.এস.সি পরীক্ষার ফলাফল :
বিগত ২ বছরের জে.এস.সি পরীক্ষার ফলাফল :
|
শিক্ষা বৃত্তির তথ্য: | জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফল :
বিগত ২ বছরের জে.এস.সি পরীক্ষার ফলাফল :
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||
অর্জন : | এ বিদ্যালয় পড়াশোনার পাশাপাশি সহ-শিক্ষা কার্যক্রম, যেমন-খেলাধুলা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রাতিযোগিতা, টেলিভিশন বিতর্ক প্রতিযোগিতা, গাইডিং, রিডক্রিসেন্ট কর্মকান্ড ইত্যাদিতেও ছাত্রীরা ১ম থেকেই জাতীয় পর্যায় পর্যমত্ম কৃতিত্বের পরিচয় দিযে আসছে। ১৯৬২ সাল থেকে এ বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে বৃত্তি লাভ করে আসছে। ২০০৮ সালে সর্বাধিক (৪০ জন) ছাত্রী বৃত্তি লাভ করে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। এখানে উলেস্নখ্য যে, বিদ্যালয়ের গার্ল গাইডস এর ভূমিকা সর্বাধিক গৌরবমন্ডিত। ১৯৬৫ সালে সমাজকল্যান মূলক কাজের জন্য প্রদেশের শ্রেষ্ঠ পুরষ্কার ‘‘ ডেইম লেসলী হোয়াইটলী’’ শীল্ড লাভের গৌরব অর্জন করে। ১৯৬৮ সালে ঐ একই কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ বিদ্যালয়ের গাইডদল প্রথম ও শেষ বারের মত পাকিসত্মানের শ্রেষ্ঠ গাইড দল হিসেবে পাকিসত্মানের সর্বোচ্চ সম্মানসূচক পুরষ্কার ‘জি.এম.খান’ শিল্ড অর্জন করে। গার্ল গাইডের পাশাপাশি রেডক্রিসেন্ট দলের মেয়ে শাম্মী আখতার (১৯৯৪), ফারহানা ফেরদৌস চপল (১৯৯৫), অরম্নন্ধতী মজুমদার (১৯৯৬), নওশীন তাবাসসুম রূপা সহ পরবর্তী বছরগুলো আরো বেশ কয়েকজন ছাত্রী জাপান ঘুরে এসেছে। ১৯৬৮ সালে বেগম রাজিয়া হোসাইন প্রদেশের শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষিকার পুরষ্কার পান। ১৯৯৩ সালে তৎকালীন প্রধান শিক্ষিকা মিসেস খাদিজা শহীদ শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে জাতীয় পুরষ্কার লাভ করেন।
১৯৯৪ সালে কিশোরগঞ্জ জেলা থেকে সর্বপ্রথম এ বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা টেলিভিশন বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করে বিজয়ী দল হিসেবে বিশেষ কৃতিত্ব অর্জন করেছে। ১৯৯৫ সালে এস.এস.সি পরীক্ষায় কাজী মাহফুজা (বিজ্ঞান শাখা) ও ফাতেমা খাতুন রাকী (মানবিক শাখা) থেকে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে যথাক্রমে ১৮-তম ও ১৯-তম স্থান লাভ করে। ১৯৯৯ সালে মানবিক বিভাগ থেকে জেবিন তাহমিনা হক ঢাকা বোর্ডে ১৪তম স্থান লাভ করে। ২০০০ সালে এস.এস.সি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগ থেকে ঢাকা বোর্ডে ১৯-তম স্থান লাভ করে মাশহুদা আমাতুলস্নাহ।২০০১ সালে প্রথম গ্রেডিং পদ্ধতিতে এস.এস.সির ফলাফল প্রদান করা হয়। ২০০৩ সালে এই জেলায় ৮ জন এ+ পাওয়া ছাত্রীর মধ্যে ৭ জনই এ বিদ্যালয়ের। এই সনেই জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ৩য়, ৬ষ্ঠ ও ৭ম স্থান অধিকার করে এই বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। ২০১০ সালে মৌরিন জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ৭ম ও আরেকটি মেয়ে ৯ম স্থান অধিকার করে। ২০১১ সালের J.S.Cপরীক্ষায় জেলার ৩৩ টি GPA-5এর মধ্যে ১৩ টি GPA-5অত্র বিদ্যালয়ের মেয়েরা অর্জন করে। ১৯৯৬ সালে বিভাগীয় পর্যায়ে দু’জন ছাত্রী (দ্বৈত) সাবিহা কবীর ও সায়মা হক লীনা ব্যাডমিন্টন খেলায় চ্যাম্পিয়নশীপ ও এককে সায়মা হক লীনা রানার্স আপ হয়েছে। ১৯৯৯ সালে ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতায় একক ও দ্বৈত বিভাগীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স আপ হওয়ার গৌরব অর্জন করে।খেলাধুলায়ও এ বিদ্যালয়ের সুখ্যাতি কম নয়। ১৯৯৭ সালে জাতীয় পর্যায়ে সর্বাধিক স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ পদক লাভের মধ্য দিয়ে এই স্কুল তথা কিশোরগঞ্জ জেলা সারাদেশে প্রথম স্থান লাভ করে। ২০০৬ সালে অনুপমা চৌধুরী ‘‘উপস্থিত বক্তৃতা’’য় জাতীয পর্যায়ে ১ম স্থান অধিকার করে। ফারজানা আক্তার পপি 5th international Children Art Biennale Bangladesh-2009-এ জাতীয় পর্যায়ে ২য় স্থান অধিকার করে। ২০১০ সালে বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরাম কর্তৃক আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় এই বিদ্যালয় ১ম স্থান লাভ করে। এস.এম. সুলতান জাতীয় শিশু চিত্রাঙ্কন্রপতিযোগিতা ২০০৬-এ ‘‘শিক্ষাবিদ অধ্যাপক হরিপদ বসু স্মৃতি পুরষ্কার’’ লাভ করে। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ শিশু একাডেমী কর্তৃক আয়োজিত জাতীয় শিশু পুরষ্কার প্রতিযোগিতায় ‘‘মাটির কাজ’’ বিষয়ে অংশ গ্রহন করে জাতীয় পর্যায়ে ৩য় স্থান অধিকার করে। এছাড়াও পাকিস্থান দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত ‘‘দোসত্মী চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা’’য় ২০০৯ সালে প্রথম স্থান অধিকার করে বিদ্যালয়ের গৌরব বৃদ্ধি করে। |
ভবিষ্যত পরিকল্পনা : | একাডেমিক ফলাফল বিগত বছরগুলোর চেয়ে আরও ভাল করা। এছাড়াও সাহিত্য, খেলাধূলা ও সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে আরও উন্নতি করে সার্বিক উন্নয়ন বৃদ্ধি করা। |
যোগাযোগ (ইমেইল এড্রেসসহ): | ফোন : ০৯৪১-৬১৮৫০ |
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস